পদ্মাপুরাণ বা মনসামঙ্গল পর্ব (১ম অংশ)


পুরাণের এই সংক্ষিপ্ত পরিচিতির আসরে শুরু থেকেই বারবার ধারণা দেয়ার চেষ্টা চলছে যে, ভারতীয় পুরাণগুলো গল্পকাহিনির ভাণ্ডার। এই ‘গল্পকাহিনি’ শব্দটা কিন্তু ব্যবহার করছি প্রচলিত এবং পাঠকের কাছে আদরণীয় শব্দ হিসেবেই। মূলত পুরাণের কাহিনিগুলো হল আখ্যান আর উপাখ্যান। এখন আমাদের একটু সাধারণ ধারণা থাকা দরকার আখ্যান-উপাখ্যান-উপকথা ইত্যাদি বিষয়ে। কারণ, প্রায়ই এগুলোকে এক কাতারের বলে মনে হয়।

ব্যাকরণসম্মত ও ভারভারিক্কী তাবত সংজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে মোটামুটি সরলভাবে আমরা এটা বলতে পারি যে, আখ্যান মানে হল দুই কিংবা তার চেয়ে বেশি শ্রুত (ঋষিদের মুখ থেকে শোনা) মূল বিষয়ের বর্ণনা। আর এই আখ্যানের ছোটছোট অংশ থেকে যখন আরো ডালপালা ছড়িয়ে নতুন নতুন কাহিনির সৃষ্টি হয়, সেগুলো হল উপাখ্যান। অর্থাৎ, একটি আখ্যান থেকে অসংখ্য উপাখ্যানের সৃষ্টি হতে পারে।

এই উপাখ্যান আবার দুই রকমের – লৌকিক ও অলৌকিক। যেটা পৃথিবীতে ঘটে বা ঘটার মতন, সেটা লৌকিক ; আর যেটা স্বর্গলোকে ঘটে বা ঘটার মত, সেটাই অলৌকিক।

কখনো কখনো উপাখ্যানের মধ্যে কথক বা লেখক নিজের কৃষ্টি-কাল-দেশ-সমাজকে মিশিয়ে দিয়ে সেটাকে আরো নিজস্ব সংস্কৃতির গল্পতে রূপ দেন, সেটাই হল উপকথা।

কোন উপকথায় যদি নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলের প্রান্তজনের অর্থাৎ একেবারে প্রাকৃতজনদের লোকমুখে প্রচলিত কথাকাহিনি মিশে যায়, সেটাই লোককথা।

আবার যে লোককথা চারণ কবিদের দ্বারা গানের বা পুঁথি পাঠের আসরে কাব্যছন্দে গীত বা পঠিত হয়েছে, সেটাই লোকগাথা।

আর সেই উপকথা, লোককথা বা লোকগাথার কোন ব্যক্তি, বস্তু বা স্থান যদি ঐতিহাসিক কিংবা বাস্তবে চাক্ষুস বা প্রমাণযোগ্য হয়, সেটা হয়ে দাঁড়ায় কিংবদন্তী। 
সাধারণ পাঠক হিসেবে পুরাণের আনন্দ চাখতে গিয়ে সরলভাবে এটুকু বুঝলেই চলবে।

এরকমই এক লোককাহিনি “পদ্মাপুরাণ” বা মনসামঙ্গল। ধর্মমঙ্গল, চৈতন্যমঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল প্রভৃতি মঙ্গলকাব্যগুলোর মত এটিও একটি। মঙ্গলকাব্য হল ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলায় রচিত স্থানীয় দেবদেবীর মাহাত্ম্যসূচক গাথাকাব্য। মনসামঙ্গল একাধারে লোকগাথা এবং কিংবদন্তীও। মনসা দেবীর পুজা, ব্রত, বিয়ের গীত সহ বিভিন্ন পালাগানের আসরে এটি কালে কালে গীত হয়েছে, অভিনীত হয়েছে ; আবার এতে বর্ণিত কিছু কিছু স্থান এবং অবস্থানও চাক্ষুষ বলে কথিত। যদিও এটি কাব্যকাহিনি রূপে লিখিত, কিন্তু পৌরাণিক ভাব ও চরিত্র আশ্রিত হওয়ায় এটি উপপুরাণের মর্যাদা লাভ করেছে। অন্য পুরাণে মনসা কশ্যপ মুনির মানসকন্যা হলেও এ পুরাণে তিনি এসেছেন শিবকন্যা হয়ে। কাহিনির শুরুতেই আছে পৃথিবী ও দেব-মনুষ্যকূলের সৃষ্টিরহস্য, গজকচ্ছপের যুদ্ধ,বালখিল্য মুনিগণ, ইন্দ্র-নাগ-গরুড় যুদ্ধ, পার্বতীর জন্ম ও শিবের সাথে বিবাহ, নারদের কুকীর্তি, তারকাসুর বধ সহ অসংখ্য পৌরাণিক কাহিনি। প্রতিটা ছোট ছোট ঘটনা থেকে পরবর্তীতে একেএকে এসেছে সব ঘটনঅঘটনের মিছিল। চলুন একবার উলটে দেখি “পদ্মাপুরাণ”-এর পাতা।

সৃষ্টির আদিতে পৃথিবীর কোন আকার ছিল না। চারদিকে শুধুই পানি। সে পানিতে শ্রীহরি বটের পাতার বিছানায় শুয়ে ভাসছেন। তাঁর নাভিপদ্মে প্রজাপতি আশ্রয় নিলেন, আর পদসেবায় মহালক্ষ্মী। এভাবেই কেটে গেল বহু যুগ। যোগনিদ্রায় মগ্ন শ্রীহরির কর্ণমল অর্থাৎ কানের ময়লা থেকে একদিন জন্ম নিল দুই অসুর – মধু ও কৈটভ। একেতো অসুর মানেই বলশালী, তার ওপর আবার শ্রীহরির দেহজাত। নিস্তব্ধ পরিবেশে দুই মহাপরাক্রমশালী অসুরের বিকট চিৎকার যেন চারিদিক বিদীর্ণ করে ফেলল। ব্রহ্মা ভয় পেয়ে শ্রীহরির নাভিপদ্মে লুকালেন। সেখানে বসে শুরু করলেন মহামায়ার সাধনা। কঠিন সে তপস্যার পরে মহামায়া দেখা দিলেন। মহামায়ার কাছে অসুর বধে সাহায্য চাইলেন ব্রহ্মা। মহামায়া সে প্রার্থনা মঞ্জুর করলেন।

শুরু হল শ্রীহরির সাথে মধু-কৈটভের যুদ্ধ। টানা পঞ্চাশ হাজার বছরের যুদ্ধের পরেও কোন ফল আসলো না। এর পরেই ঘটল এক দুর্লভ ঘটনা। সবসময় অসুররা বর প্রার্থনা করে আর দেবতারা হন বরদাতা। মহামায়ার লীলায় অসু্রদের মাথায় কী এক গোল লাগল। তারা শ্রীহরিকে বলল,”তোমার বীরত্বে আমরা মুগ্ধ। বল, তুমি কী বর চাও?” উত্তরে মুচকি হেসে শ্রীহরি বললেন,” তোমায় যেন হত্যা করতে পারি, সে বর দাও।"

অসুরেরা পড়ল মুশকিলে। তাদের যে মাথায় এখন মহামায়ার আনাগোনা, সে মাথা খাটিয়ে দুজনে উপায় নিয়ে ভাবতে শুরু করল। তারা দেখল সারা সৃষ্টি জলমগ্ন, তাই দারুণ বুদ্ধি খাটিয়ে শ্রীহরিকে বর দিল,”একমাত্র জলশূন্য স্থানেই আমাদের বধ করতে পারবে।“ বরলাভমাত্র শ্রীহরি তাদেরকে নিজের হাঁটুতে বসিয়ে সুদর্শন চক্র দ্বারা শিরশ্ছেদ করলেন। নিহত দুই বিশালদেহী অসুরের বিপুল মেদ থেকে সৃষ্টি হল এই মেদিনী বা পৃথিবী।

এবার শ্রীহরি সৃষ্টিকার্য শুরু করলেন। তাঁর নাভি হতে বের হলেন ব্রহ্মা, হৃদয় হতে বিষ্ণু আর ললাট থেকে শিব। ব্রহ্মার উপর দায়িত্ব পড়ল সৃষ্টির, বিষ্ণুর পালনকারীর, আর শিবের সংহারের।

ব্রহ্মা প্রথমেই অত্রি, পুলহ, নারদ, কশ্যপ, দক্ষ প্রভৃতি প্রজাপতিকে সৃষ্টি করলেন। প্রজাপতি মানে এরা প্রজার পতি বা স্রষ্টা, অর্থাৎ এরাই সৃষ্টিকান্ড এগিয়ে নিয়ে যাবেন। দক্ষের ঔরসে জন্ম নিল এগারজন কন্যা। এর মধ্যে সতী স্বামী হিসেবে লাভ করলেন শিবকে। দিতি, অদিতি, কদ্রু, বিনতা প্রভৃতি কন্যাকে দক্ষ অর্পণ দিলেন কশ্যপের হাতে। অদিতির গর্ভে জন্ম নিলেন দেবগণ আর দিতির গর্ভে অসুরকূল। আবার কদ্রুর গর্ভে জন্ম নিল নাগকূল আর বিনতার গর্ভে গরুড়। এভাবে এগিয়ে যেতে লাগল সৃষ্টি।

একদিন ইন্দ্রের শাদা ঘোড়া সরোবরতীরে বিচরণ করছিল। দূর থেকে দেখে বিনতা বলল,” কী চমৎকার এই শ্বেত অশ্বটি!” কদ্রু বলল,” কোথায় শাদা ? এতো নীল অশ্ব।“ এ নিয়ে শুরু হয়ে গেল দুজনের কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে বিনতা বলল,”ঠিক আছে, যদি ঐ ঘোড়া শ্বেত হয়, তবে তুমি আমার দাসী হবে ; আর যদি নীল হয়, আমি হব তোমার।“ কদ্রু তখন এক বুদ্ধি ফাঁদল। ছেলেদের ডেকে বলল,”তোমাদের মধ্যে যারা নীল রঙের সাপ আছ, তারা ঐ ঘোড়াটিকে পেঁচিয়ে রাখবে।“

পরদিন ঘোড়াটি যখন সরোবরের তীরে আসলো, নীল রঙের সাপগুলো তাকে বেষ্টন করে রাখল। কদ্রু তখন বিনতাকে ডেকে দেখালেন ঘোড়াটিকে। বিনতা দেখল আসলেই সেটা নীল। শর্তে হেরে গিয়ে সে দাসত্ব মেনে নিল। এভাবেই দিন কাটতে লাগল।

বড় হয়ে গরুড় যখন দেখলেন তাঁর মা দাসী হিসেবে আছেন নিজেরই বোনের, তখন দাসত্ব মোচনের উপায় জানতে চাইলেন তিনি বিমাতা কদ্রুর কাছে। কদ্রু শর্ত দিল,” ইন্দ্রপুরে যে অমৃত আছে তা এনে যদি আমার নাগসন্তানদের দিতে পার, তবেই তোমার মা’র মুক্তি।“ গরুড় চললেন সে অমৃত আনতে। ইন্দ্রলোকের নিজস্ব সম্পদ সে অমৃত কি আর এমনিতেই আনা যায় ? ইন্দ্রের সাথে তুমুল যুদ্ধ শেষে তাঁকে পরাজিত করে তবে গরুড় পেলেন সে অমৃত। ফেরার পথে শ্রীহরির সাথে দেখা হল গরুড়ের। তাঁর মাতৃভক্তিতে খুশি হয়ে শ্রীহরি তাঁকে বর প্রার্থনা করতে বলেন। গরুর বললেন,” আমাকে এই বর দিন যেন পৃথিবীর সকল সাপ আমার খাদ্য হয়।“ শ্রীহরি বললেন,”তথাস্তু”। কদ্রুর হাতে গরুড় সে অমৃতভান্ড এনে দিলে তাঁর মাতা বিনতা দাসত্ব থেকে মুক্তি পেলেন। মজার বিষয় হল, কদ্রুর কারসাজিতে অমর হবার অমৃত নাগেদের হাতে পৌঁছাল ঠিকই, কিন্তু একই সময়ে তারা গরুড়ের খাদ্য হবে – এটাও নির্ধারিত হয়ে গেল। আর তখন থেকেই নাগ আর গরুড় চিরকালীন শত্রুতে পরিণত হয়।

এভাবেই এগিয়ে চলা এপুরাণে শিব-পার্বতীর বিয়ে, গণেশের জন্ম, হাতির মাথাধারণ সহ বেশকিছু আখ্যান-উপাখ্যান থাকলেও সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ হল শিবের দুই কন্যা নেতা ও পদ্মাবতীর জন্ম। মুলত এরাই প্রায় সমগ্র পদ্মাপুরাণ জুড়ে আছে।

একদিন শিব ঘুরতে ঘুরতে এক পুষ্পবনে গেছেন। বনে ঢুকে দেখতে পেলেন এক মনোহর পুষ্পশয্যা। সেখানে শোয়ামাত্রই শিবের সারা দেহ এক আশ্চর্য যৌনানুভুতিতে আচ্ছন্ন হয়ে গেল। তিনি ভীষণরকম উত্তেজিত হয়ে উঠলেন। তাঁর কামজর্জর দেহ থেকে ঘাম বেরুতে লাগল। সেই ঘাম মাটিতে পড়লে জন্ম নেয় এক কন্যা। শিব তাঁর নাম রাখলেন – নেতা। এর কিছুকাল পর পুষ্পবনে বেড়াতে গিয়ে শিব শ্রীফল ভক্ষণ করেন। সে ফলের ক্রিয়ায় শিবের সারা দেহ কামানলে পুড়ে যেতে লাগে। কামনায় তাঁর চেতনা লুপ্ত হবার উপক্রম। এমন সময় তাঁর বীর্যপাত ঘটে। সে বীর্য মুঠিতে ধরে তিনি নিক্ষেপ করলেন পদ্মবনে। সে বীর্য গিয়ে পড়ল এক পদ্মের পল্লবে। সেখান হতে জন্ম নিল এক পরমাসুন্দরী কন্যা। পদ্মাপল্লবে জন্ম বলে তার নাম হল পদ্মাবতী। যার অপর নাম মনসা। এদিকে পিতা শিব কিন্তু জানতেও পারলেন না পদ্মাবতীর জন্মকথা।

পদ্মাবতী বা মনসা বড় হয়ে জানতে পারলেন যে শিব তাঁর পিতা। যে দেবাদিদেব সকলের আরাধ্য, তিনি কিনা তার পিতা! তিনি চললেন পিতাকে দেখতে। কিন্তু সেখানে ঘটে গেল আরেক বিপদ। অপরূপা পদ্মাবতীকে দেখে নেশাতুর শিব কামনাবশত তাঁকে কাছে টেনে নিলেন।

সুন্দরী দেখিয়া ভ্রান্ত হৈল শঙ্কর, কামবাণে সর্ব্ব অঙ্গ হৈল জরজর।।
সাত-পাঁচ ভাবি শিব সম্মুখেতে গেল, পদ্মা সম্বোধিয়া তবে কহিতে লাগিল।।
কোথায় তোমার ধাম, কাহার কুমারী, এই পদ্মবনে কেন আছ একেশ্বরী।।
শত-চন্দ্র জিনি আভা তোমার বদন, রূপ দেখি চিত্ত মোর হৈল উচাটন।।

পদ্মাবতী নিজের পরিচয় দিলে শিব তা অস্বীকার করেন এবং মনসার দিকে হাত বাড়ান। তখন নাগকন্যা মনসা মনেমনে ক্ষমা চেয়ে পিতার দিকে বিষদৃষ্টিতে তাকালে শিব জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটে। পার্বতীর কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে শিব মনসাকে এক ঝোলায় লুকিয়ে কৈলাসে নিয়ে যান। কিন্তু পার্বতীর কাছে তা ধরা পড়ে যায় –

ঝোলার মাঝারে দেখি পরমা সুন্দরী, ক্রোধেতে আচ্ছন্ন হৈল মহামায়া গৌরী।।
বুড়া শিব কোথা হৈতে পেয়েছে সুন্দরী, ঝোলার মাঝারে তারে রাখে যত্ন করি।।
বৃদ্ধকালে মহেশের ধর্ম্মে নাহি মন, কোথাকার নারী আনি করিছে গোপন।।

পদ্মাবতী নিজের পিতৃ পরিচয় দেয়ার পরেও দেবী পার্বতী বিশ্বাস করলেন না। আঘাত ও অপমানের চূড়ান্ত করে ছাড়লেন তিনি। ক্ষোভেদুঃখে নাগের স্বভাবজাত ক্রোধে মনসাও তাঁকে দংশন করে বসল। তীব্র হলাহলে প্রাণ হারাণ পার্বতী। পরে শিব এসে তাঁর প্রাণ ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু এখান থেকেই শুরু হয় পার্বতী-মনসা বিবাদ।

শিব দেখলেন নিজের সংসারের স্বার্থে আর কন্যার সুখের জন্যে তাড়াতাড়ি কন্যার বিয়ে দেয়াই মঙ্গল। নারদকে দিলেন ঘটকালির দায়িত্ব। নারদ বহু খোঁজখবর নিয়ে এক পাত্রের খবর নিয়ে এলেন - তপস্বী অহিরাজের পুত্র মণিরাজ। সব দিক থেকেই পাত্র পদ্মাবতীর উপযুক্ত। এরপর মহা ধুমধাম করে তাদের বিয়ে হয়ে যায়।

প্রধান তিন দেবতার একজন শিবের মেয়ের বিয়ে। বিশাল আয়োজন। কোথাও কোন সমস্যা নেই এত বড় আয়োজনে। সব সুচারুরূপে সম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একেবারে বিদায় বেলায় এসেই ঘটল এক অঘটন।

নব দম্পতিকে আশীর্বাদের জন্য এসেছেন দেবগণ, বহু রাজা, মুনি, ঋষি সহ অসংখ্য অতিথি। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন চম্পকনগরের রাজা চন্দ্রধর। পদ্মাবতী কী এক খেয়ালে পিতা শিবের কাছে যৌতুক হিসেবে চন্দ্রধরকে চেয়ে বসলেন শিষ্য হিসেবে!

ত্রিভূবনে যত জীবে, সকলে তোমারে সেবে – এক গোটা শিষ্য নাহি মোর।
কর বাক্য অবধান, দেবসভা বিদ্যমান – দেহ মোরে চাঁদেরে নফর।।

এ যেন নিয়তির খেলা! না হলে তিনি একাজ করবেন কেন? আর তাও বা চন্দ্রধরকেই কেন ? এ চন্দ্রধর আর কেউ না – সেই আদি পরম শত্রু মনসার, যার পূর্বজন্মরহস্য আর পুণর্জন্ম দুটোই যেন পুর্বনির্ধারিত পদ্মাবতীর সাথে অবিচ্ছেদ্যরূপে। আর যাকে সঙ্গ দিয়েছেন মনসার বিমাতা পার্বতীও। এ থেকেই মোড় নিল এক নতুন দিকে ‘পদ্মাপুরাণ’, মনসার কাহিনি।


প্রাসঙ্গিক লেখা