স্মার্টফোন বিজনেস থেকে সরে যাচ্ছে এলজি
টানা ছয় বছর ধরে লোকসান গুনে অবশেষে এলজি স্মার্টফোন মার্কেট থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসে তারা এই লস থেকে কিভাবে বের হওয়া যায় তার উপায় খুঁজতে শুরু করে। ইতিমধ্যে কোম্পানীটি স্মার্টফোন ব্যবসায় ৪.৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার লস গুনেছে। আলট্রা ওয়াইড ক্যামেরার মত ইনোভেটিভ ফিচার নিয়ে আসা এলজি ২০১৩ সালেও বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানী হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছিলো। কিন্তু স্মার্টফোন মার্কেটে তুমুল প্রতিযোগীতার মুখে টিকে থাকতে পারেনি তারা। পৃথিবীর বৃহত্তম দু'টো স্মার্টফোন প্রস্তুতকার কোম্পানী অ্যাপল ও স্যামসং-এর সাথে চাইনিজ কয়েকটি ব্রান্ডের উত্থান এই প্রতিযোগীতা আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলো। নিজেদের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার প্রযুক্তি নিয়েও তারা সমস্যায় ছিলো। দক্ষিন আমেরিকা ও দক্ষিন কোরিয়াতে এলজি ফোন জনপ্রিয় থাকলেও পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোতে তাদের ফোনের বিক্রি বাড়াতে পারেনি। ২০২০ সালে এলজি মাত্র ২৮ মিলিয়ন ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রি করতে পেরেছে যেখানে স্যামসং বিক্রি করেছে ২৫৬ মিলিয়ন ইউনিট। এভাবে টানা কয়েক বছর লসে থাকার পর এলজি চেষ্টা করেছিলো তাদের ব্যবসার কিছু অংশ বিক্রি করে দিতে, কিন্তু সেখানেও তেমন কোন সাড়া পায়নি সাউথ কোরিয়ান এই কোম্পানীটি।
মাল্টিন্যাশনাল এই কোম্পানীটির মাত্র ৭.৪% রেভিনিউ আসতো তাদের স্মার্টফোন ডিভিশন থেকে এবং পৃথিবীর মাত্র ২% মার্কেট তাদের দখলে ছিলো। স্যামসং এর পরে সবচাইতে জনপ্রিয় টেলিভিশনের ব্রান্ড হিসেবে এলজি এখনো মার্কেটে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে এলজি নানা ধরনের পণ্যের জন্য সুবিখ্যাত। স্মার্টফোন মার্কেটেও একসময় তারা বেশ ভালো করছিলো, কিন্তু টানা লসে থেকে তারা ডিভিশনটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। এলজি তাদের অফিসিয়াল বিবৃতিতে জানিয়েছে, চরম প্রতিযোগীতার স্মার্টফোন মার্কেট থেকে সরে গিয়ে তারা বরং ইলেকট্রিক কার, রোবটিক্স ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সে অধিক মনোযোগী হবে।