আপনার নতুন বছরটি কেমন কাটবে তা আপনিই ঠিক করুন


বছর ঘুরে প্রতিবার নতুন বছর আসে। আগের বছরের হিসাব নিকাশ মেলানোর পাশাপাশি নতুন বছরের জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহটি কাজে লাগানোর ব্যপারে যত স্মার্ট হতে পারবেন, ততই আপনার জন্য ভালো হবে। চলতি বছরে কি কি অর্জন করেছেন তা অবলোকন করার জন্য এবং কিভাবে নতুন বছরটিকে আপনি কাজে লাগিয়ে আপনার কৃত্বিতের ভান্ডার কে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য আপনাকে আরো কৌশলি হতে হবে। সেরকম কিছু কৌশল নিয়ে আজকের আলোচনা।

আপনার কাছে আপনার লক্ষ্য পূরনের জন্য কতটুকু সময় আছে তা বিবেচনা না করেই যদি আপনি লক্ষ্যর দীর্ঘ তালিকা তৈরি করেন, সেটা আপনার জন্য হতাশা তৈরি করতে পারে।

প্রথমে, নতুন বছরে আপনার ভবিষ্যত লক্ষ্যগুলো ঠিক করে ফেলুন

আমরা অনেকেই বাইরের কারোর দ্বারা (মিডিয়া, শিক্ষক, পরিবার, বন্ধুবান্ধব) প্রভাবিত হয়ে আমাদের লক্ষ্য ঠিক করি। যদিও অধিকাংশ সম্ভবত তখনই লক্ষ্য টা অর্জন করতে চান যখন অন্যর কাছে দায়বদ্ধতা অনুভব করেন। কিন্তু লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজন নিজের ভিতরে লক্ষ্য পূরনের তাড়না অনুভব করা। জীবনে আপনি আসলে কী হতে চান তা যদি বের করতে চান তাহলে আপনার লক্ষ্য গুলোকে কাগজে লিখে ফেলুন। আপনি সত্যিকার অর্থে যতটুকু করতে পারবেন তার থেকে অধিক পরিমানে লেখুন। আপনার মনে আসা সব ধারনা লিখুন তারপর সেখান থেকে যেগুলা আপনার ভিতরে অনুপ্রেরণা জাগিয়ে তোলে সেগুলোকে খুঁজে বের করুন।

দ্বিতীয়ত, বড় কর্ম পরিকল্পনাগুলো ঠিক করুন যেগুলো আপনি করতে চান অথবা আপনাকে করতেই হবে

আপনার কাছে আপনার লক্ষ্য পূরনের জন্য কতটুকু সময় আছে তা বিবেচনা না করেই যদি আপনি লক্ষ্যর দীর্ঘ তালিকা তৈরি করেন, সেটা আপনার জন্য হতাশা তৈরি করতে পারে। যেমন ধরুন, এই বছরের জন্য আমার বড় পরিকল্পনাটি ছিল দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার জন্য গবেষনা এবং আবেদন করা। আমি জানতাম ওটা পুরন হতে যাচ্ছিল এবং তার জন্য আমাকে মানসিকভাবে ও প্রস্তুত থাকতে হয়েছে। আমি যদি এটার পাশাপাশি অন্য কোন বড় প্রজেক্ট এই বছর আমার তালিকায় রাখতাম, ওটা সময় মত অর্জন করতে পারতাম না কারন বাইরে পড়তে যাওয়া ছিল আমার বড় কার্য পরিকল্পনা। প্রতি বছর আপনার এমন কিছু দায়িত্ব থাকে যা আপনাকে সেই বছরের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হয়। আপনি সেগুলোকে আপনার লিস্ট এ রাখুন যাতে আপনার করনীয় সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারনা পেতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী তা অর্জনের পথে আগাতে পারেন। এইপর্যন্ত এসে, আপনি জানেন না, ভবিষ্যত পরিকল্পনারগুলোর মাঝে অবশ্যম্ভাবী রুপে অপ্রতাশিত কিছুর মুখোমুখি হবেন কিনা। তাই তার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকুন যা আপনার মানসিক অবস্থাকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করবে। লক্ষ্য অর্জনের জন্য এটি জরুরী।

তৃতীয়ত, আপনার লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করুন

“কোন জিনিসটি সত্যিকার অর্থে থাকা দরকার কোন লক্ষ্যেকে বাস্তবে রুপ দেওয়ার জন্য?” আমার এক পরামর্শদাতা আমাকে এই প্রশ্নটি করেছিলেন। যদি নতুন বছরে আপনার লক্ষ্য হয় নতুন চাকরি পাওয়া, সেক্ষেত্রে কোন জিনিসটি সত্যিকার অর্থে থাকা প্রয়োজন? এটাকে অন্যভাবে বলা যায় আপনাকে লক্ষ্যে পৌছানো জন্য আগে তার জন্য প্রয়োজনীয় ছক কাটতে হবে। যেমন, এই বছর আমার অন্যতম লক্ষ্য ছিল ব্যায়ামের অভ্যাস টাকে পুনরায় নতুন করে শুরু করা। এটার জন্য আমাকে নির্দিষ্ট কিছু কাজ করতে হয়েছে যেমন স্নিকার কিনা, হার্ট রেট মাপার মেশিন খুজে বের করা, জিমের ক্লাস রুটিন যাচাই করা যেগুলা কিনা আমার প্রধান উল্লেখিত লক্ষ্য না কিন্তু লক্ষ্যটা পুরনের জন্য দরকারি। তেমনি আপনার লক্ষ্য পূরন শুরু হয় পরবর্তী কিছু পরিকল্পিত কর্মপন্থার নকশা আঁকার মধ্যে দিয়েই এবং তা পূরনের সময়সীমা ও আপনাকে ঠিক করতে হবে। লক্ষ্য বুঝে তার জন্য নির্দিষ্ট সময় সীমা বেঁধে দিতে হয় যেখানে আবার কিছু লক্ষ্য পূরনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন হয় না। দীর্ঘসূত্রতা এড়ানোর জন্য আপনি আপনার লক্ষ্যেগুলোর প্রতি মনোযোগী হতে হবে এবং তার জন্য আপনাকেই উপযুক্ত সময়সীমা নির্ধারন করতে হবে।

অবশেষে, আপনার নির্বাচিত লক্ষ্যকে পূর্নবিবেচনা ও আধুনিক রাখার জন্য একটি যথাযথ নিয়মের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যান

বাস্তবিক অর্থে আপনি যখন নতুন বছরে লক্ষ্য পুরনের কর্মক্ষেত্রে নেমে যাবেন, তখন পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনাগুলোকে সম্বনয় সাধন করা লাগতে পারে। নির্ধারিত সময় থেকে বেশি সময় নিতে পারে অথবা নতুন কোন লক্ষ্য ঠিক করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। তাই, নির্দিষ্ট সময় পর পর আপনি ঠিক পথে আগাচ্ছেন তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এবং সেই অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনাকে কে সময় উপযোগী করার জন্য পূর্বলিখিত লক্ষ্যগুলোকে পূর্নবিবেচনা, পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষন করুন ।

নতুন বছর আপনার জন্য শুভ হোক এবং অনেক নতুন সুযোগ ও সম্ভবনা সৃষ্টি করুক।


প্রাসঙ্গিক লেখা